Shanto tech bd : বর্তমান বিশ্বে আমরা আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে যতগুলো আর্থিক লেনদেন করে থাকি তার ৬০% অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকি। বর্তমানে করোনার এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে অনলাইনে আর্থিক লেনদেনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধুমাত্র আমাদের দেশের কথা বলতে গেলে অনলাইনের আর্থিক লেনদেনের প্রচুর চাহিদা বেড়ে গেছে। এটির একটি সুবিধা কোন ধরনের শারীরিক যোগাযোগ ছাড়া যে কোন স্থান থেকে আপনি যে কোন পরিমানের টাকার লেনদেন করতে পারবেন , হয়তো কিছু ভ্যাট কর্তন করা হয় এইসব অনলাইন লেনদেনের জন্য , তবুও অনলাইনের লেনদেনের মাধ্যমে অনেক সময় বেঁছে যাচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যম আছে যেখানে আমরা অনলাইন লেনদেন করে থাকি। যেমন- বিকাশ (bkash), রকেট (rocket), নগদ (nagad), ইন্টারনেট ব্যাংকিং (internet banking), উপায় (Upay) আরও অনেক।
অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে আপনি বেতন রিসিভ করা থেকে শুরু করে , যে কোনো ব্যক্তিকে যে কোনো প্রান্তে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আমরা সবাই জানি যার যেই রকম উপকারিতা আছে তার তেমনি অপকারিতাও আছে। অনলাইন লেনদেন যেমন একদিকে সুবিধা আছে তেমনি অন্যদিকে এর অনেক অসুবিধাও রয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিকাশের (bkash) নাম ব্যবহার করে নতুন কৌশলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে প্রতারক চক্র । বর্তমানে এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, অনেক সাধারণ মানুষ এসব অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে। এমন অনেক ব্যক্তি আছে শঠ, প্রতারক , লোভী যারা বিভিন্ন মানুষকে বোকা বানিয়ে অথবা বিভিন্ন উপহারের লোভ দেখিয়ে তাদের উর্পাজিত টাকা অনলাইনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে নেয়।
করোনাকালীন এই সময়ে অনেক ব্যক্তি স্বশরীরে গিয়ে কোন আর্থিক লেনদেন না করে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম দিয়ে তাদের আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করছে। তারই সুযোগ নিয়ে অনেক শঠ, প্রতারক অনেক ব্যক্তিকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করছে
আজকে আমরা এমনি একটি ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছি, যেখানে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন একজন বাসিন্দা প্রতারণার স্বীকার হয়েছে। সূত্র থেকে খবর পাওয়া যায় যে, তিনি একজন ফুডপান্ডা রাইডার। তার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তার পরিচিতি গোপন করা হয়েছে। তিনি আমাদের কে জানান যে,
ঈদের প্রথম দিন সন্ধ্যার দিকে একটি অচেনা নাম্বার থেকে তার মোবাইলে কল আসে। যে অপিরিচিত ব্যক্তি তাকে কল করে সে বলে যে,
প্রতারক : আপনার কি বিকাশ একাউন্ট আছে ?
ভুক্তভোগী : হ্যাঁ আছে,
আমি বিকাশ (bkash) ব্যবহার করি।
প্রতারক: আপনার মোবাইলে সরকার থেকে ঈদের উপহার হিসেবে যে ২৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে, তা কি আপনার বিকাশ একাউন্ট (bkash account) যোগ হয়েছে
?
ভুক্তভোগী
: না,
আমি পাইনি ।
প্রতারক: আপনার বিকাশ (bkash) সার্ভারে সমস্যা থাকার কারণে হয়তো আপনি ঈদের উপহার ২৫০০ টাকা পান নি। আপনি যদি ঈদের উপহার টি আপনার বিকাশে পেতে চান তাহলে আপনি বিকাশের বিকাশ সার্ভারটি (bkash server) ঠিক করতে হবে। আমি কি আপনার বিকাশ সার্ভারটি (bkash server) ঠিক করে দিব ?
ভুক্তভোগী
: হ্যাঁ, ঠিক করে দিন।
প্রতারক: আপনার বিকাশ (bkash) মোবাইল নাম্বারটিতে একটি ৬ ডিজিটের কোড যাবে , ঐ কোড টি আমাকে বলুন। (প্রতারক যখন তার ভুক্তভোগীর বিকাশ (bkash) মোবাইল নাম্বার দিয়ে লগ ইন করতে চেষ্টা করে তখন একটি ৬ ডিজিটের বিকাশ (bkash) কোড , ভুক্তভোগীর নাম্বারে সেন্ড হয়, যেটি দিয়ে প্রতারক বিকাশে (bkash) লগ ইন করতে সক্ষম হবে।)
ভুক্তভোগী : কিছুক্ষণ পর বিকাশের (bkash) মেসেজ আসার পর ৬ ডিজিটের কোড টি বলে ।
প্রতারক : আপনার বিকাশের সার্ভারটি (bkash server) ঠিক করার জন্য আপনার বিকাশের পাসওয়ার্ডের (bkash Password) শেষ ২ ডিজিট টি আমাকে বলুন।
ভুক্তভোগী : বিকাশের পাসওয়ার্ডের (bkash Password) শেষ ২ ডিজিট টি বলে
এবং একটি কনফামেশন কোড ম্যাসেজ আসে তা ও আমি প্রতারক কে বলে দেন।
প্রতারক : ধন্যবাদ । আপনার বিকাশ সার্ভারটি (bkash server)ঠিক হয়েছে। আপনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২৫৫০ টাকা পেয়ে যাবেন।
ভুক্তভোগী : ওনার সাথে কথা বলা শেষে কিছু মূহুর্ত অতিক্রম করলে আমি আমি বিকাশে (bkash)যখন লগ ইন করি তখন দেখি আমার স্যালারির যে বিকাশ ব্যালেন্স (bkash balance) ৩,০০০ টাকা ছিল তা একদম ভ্যানিশ হয়ে গিয়াছে। অর্থাৎ আমার বিকাশ ব্যালেন্স এখন শূন্য । তারপরে আমি বুঝতে পারি যে আমি প্রতরণার স্বীকার হয়েছি।
উপরের কথাকোপতন থেকে আপনারা বুঝতেই পারছেন যে, ভুক্তভোগী ব্যক্তি কিভাবে বিকাশের (bkash)প্রতারেণার স্বীকার হয়েছে এবং একটু অসাবধানতার কারণে তার কষ্টের অর্জিত টাকা প্রতারক আত্মসাৎ করে নিয়েছে।
এসব প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন বিকাশের নয়। একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে এসব চাতুরির মাধ্যমে মানুষজনদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
আজকে আপনারদের এই ঘটনাটি বলার একমাত্র কারণ হলো
যাতে আপনারা এই ধরনের প্রতারকচক্র হতে নিজেকে সক্ষম রাখতে পারবেন। মনে রাখবেন, যদি আপনাকেও
কোন অপরিচিত নাম্বার থেকে উপহার অথবা টাকা পাওয়ার লোভ দেখিয়ে কল অথবা মেসেজ দেয় এবং আপনার কোন ধরনের বিকাশ নাম্বার (bkash number), বিকাশ ভেরিফিকেশন কোডটি (bkash verification code), বিকাশ পাসওয়ার্ড (bkash Password) জিজ্ঞাসা করে তাহলে সঙ্গে কল টি কেটে দিবেন অথবা আপনার পার্শবর্তী সাইবার সিকিউরিটিতে কল দিয়ে এসব বিষয়ে তাদেরকে অবগত করুন।
এইসব প্রতারকচক্র থেকে বাঁচতে বিকাশ কর্তৃপক্ষ ৪টি সতর্কতামূলক বার্তা দিয়েছেন। এসব অনুসরণ করলে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
১. নিজের বিকাশ
(bkash)একাউন্টের পিন নম্বর ও একাউন্ট ব্যালান্স কখনো কাউকে বলবেন না। এমনকি +16247 বা এই ধরনের নম্বর থেকে ফোন করলেও পিন নম্বর কিংবা পিন নম্বরের যোগফলও বলা যাবে না।
২. ফোনে কেউ যদি আপনাকে ভুল করে টাকা পাঠানোর কথা বলে ফেরত চায়, আগে একাউন্ট ব্যালান্স চেক করুন।
৩. কারো প্ররোচনায় লটারি জেতার মিথ্যা আশায় কোনো লেনদেন করবেন না।
৪. ফোনে শুধু কারো কথা শুনে পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে কারো নির্দেশনায় কোনো নম্বর বা কোড ডায়াল করবেন না বা টাকা পাঠাবেন না
বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে জানানো হয়, এই ধরনের কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে যতদ্রুত সম্ভব 16247 কল করে বা ফ্রড ম্যানেজমেন্ট টিমকে support@bkash.com এ ইমেইল করে রিপোর্ট করুন।
গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ার থেকে জানানো হয়েছে, *33*000# কোড নম্বর ডায়াল করা হলে সিমের আউট গোয়িং কল বন্ধ হয়ে যায়। আর *35*0000# ডায়াল করলে ইনকামিং কল বন্ধ হয়ে যায়।
সিমের আউট গোয়িং বন্ধ হয়ে গেলে #33*0000# ডায়াল করলে আবারো সিমের লক খুলে যাবে। একইভাবে #35*0000# ডায়াল করলে আবারো ইনকামিং কল করা যাবে।
আশা করি, এই পোষ্টটি আপনাদের অনেক সচেতন হতে কাজে লাগবে। আপনি যদি চান আর কেউ এইরকম প্রতারণার স্বীকার না হোক তাহলে , অবশ্যেই আমার এই পোষ্টটি শেয়ার করুন, যাতে অন্যরাও এই পোষ্টটি পরে সচেতন হয়|


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন