Shanto tech bd :মাঝপথে ভারত থেকে করোনার টিকা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেলেও এরই মধ্যে সরকারের কাছে টিকা বিক্রি করে ৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার মুনাফা ঘরে তুলেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ভারতের সেরাম ইনিস্টিটিউট থেকে আনা প্রতিটি টিকায় বেক্সিমকো ফার্মা ৭৭ টাকা করে মুনাফা করছে। সব খরচ বাদ দেওয়ার পরই এ মুনাফা করেছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানি হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মার প্রকাশিত। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে মুনাফার এ তথ্য পাওয়া যায়।
অক্সফোর্ড ও অ্যাষ্টাজেনেকার আবিষ্কৃত করোনার টিকা ভারতে তৈরি করছে সেরাম ইনষ্টিটিউট। তাদের কাছ থেকে টিকা এনে সরকারকে সরবরাহকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা। বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ইনষ্টিটিউট ও বেক্সিমকোর মধ্যে সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় এ টিকা আমদানি করা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম ইনষ্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ করোনার টিকা আনবে বেক্সিমকো ফার্মা। এখন পর্যন্ত এনেছে ৭০ লাখ ডোজ। ভারতে দ্বিতীয় দফায় করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশটি সেরামের তৈরি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। তাতে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেম বিপাকে পড়লেও টিকার মুনাফা যোগ হওয়ায় বেক্সিমকো ফার্মা কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৬২ শতাংশ।
জানতে চাইলে বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান জানান যে, সরকারের সঙ্গে যে চুক্তি, তাতে প্রতি টিকার জন্য আমাদের ১ মার্কন ডলার করে পাওয়ার কথা। আর চার ডলার করে টিকার দামহিসেবে সেরাম ইনষ্টিটিউট দেবে সরকার। সেই অনুযায়ীই আমরা সরকারকে
টিকা সরবরাহ করে চুক্তি অনুযায়ী আমাদের প্রাপ্য অর্থ পেয়েছি।
এ জন্য আমাদের নতুন করে বিনিয়োগ করতে হয়েছে।
ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনষ্টিটিউট থেকে ছয় মাসের মধ্যে তিন কোটি ডোজ টিকা আনার কথা ছিল। সেই হিসাবে প্রতি মাসে ৫০
লাখ টিকা আসার কথা । আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে করোনার টিকার প্রথম আপতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যাঁরা প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের সবাই দ্বিতীয় টিকা নিতে পারবেন না। কারণ টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকট কাটাতে রাশিয়া ও চীন থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে সরকার।
এখন পর্যন্ত সরকারকে ৭০ লাখ টিকা সরবরাহ করলেও মুনাফা হিসেবে যুক্ত হয়েছে ৫০ লাখ টিকার হিসাব। কারণ হিসেবে কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী নেওয়াজ জানান যে, “সরকারকে আমরা ৭০ লাখ টিকা সরবরাহ করেছ ঠিকই; কিন্তু
উল্লিখিত সময়ে (জানুয়ারি-মার্চ) ৫০ লাখ টিকার আয় হিসাবে যুক্তি হয়েছে। ২০ লাখ টিকা এপ্রিলে সরবরাহ করা হয়েছে। তাই সেই আয় এ প্রান্তিকের
হিসাবে যুক্ত হয়নি।”
করোনার টিকা সরবরাহের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি এত দিন কোনো পক্ষ থেকেই প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ভারত থেকে টিকা এনে বেক্সিমকো কত মুনাফা করছে, তার কোনো হিসাবও পাওয়া যায়নি। যদিও
বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে চুক্তিটি প্রকাশের দাবি করা হয়েছিল। এমনকি এককভাবে বেক্সিমকোকে টিকা আমাদানির সুযোগ দেওয়া নিয়ে দেশে চলছিল নানা সমালোচনা।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন