Boxed Width - True/False

test

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১

দাঁত ভালো রাখতে হলে আমাদের কী কী করা উচিত?

 


দাঁত আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কিন্তু প্রায়ই আমরা এর অবহেলা করে থাকি যার ফলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে এমনকি দাঁত হারাতে হতে পারে। দাঁতের যত্নে করণীয়গুলো জেনে নেয়া যাক।

ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এস এম ইকবাল হোসেন বললেন, ‘দাঁতের সুস্থতায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দাঁত ব্রাশ করা, মাড়ি মালিশ করা আর ভালোভাবে কুলকুচা করা, দাঁতের পরিচ্ছন্নতায় এই তিনটি অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রতিবার খাবার পর দাঁত ব্রাশ ও কুলকুচা করতে হবে। খাবারের কণা যেন লেগে না থাকে, সেটি নিশ্চিত করতেই এসব অভ্যাস। সুস্থতার জন্যই এসব কাজে আলসেমি চলবে না। আগেকার দিনে টুথব্রাশ ছিল না, তখনকার মানুষ মিসওয়াক ব্যবহার করতেন। তাঁদের দাঁতও সুস্থ থাকত। তবে আজকের দিনে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বেশি গ্রহণযোগ্য উপায় হলো টুথব্রাশ ব্যবহার।

অযত্নে-অবহেলায়
খাবারের কণা (বিশেষত শর্করাজাতীয় খাবার) ও মুখের ভেতরের লালার উপস্থিতিতে জীবাণুরা ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হয়। মাড়িতে প্রদাহ হয়, পুঁজ জমা হয়, দাঁত ক্ষয় হয়, একসময় দাঁত পড়েও যেতে পারে। বয়স হলে দাঁত পড়বেই, এমন ধারণা ঠিক নয়; বরং যত্নের অভাবেই একসময় দাঁত পড়ে যায়। এ ছাড়া দাঁতের একেবারে ভেতরের অংশে প্রদাহ হলে মারাত্মক ব্যথা হয়, যার তীব্রতাকে প্রসববেদনার পরেই (তীব্রতায় দ্বিতীয়) ধরা হয়।

ঘুমের আগে বাড়তি যত্ন
রাতে ঘুমানোর আগে আঙুলের সাহায্যে মাড়ি মালিশ করার জন্য ১-২ মিনিট সময় বরাদ্দ করুন। নিচের পাটির মাড়ি মালিশ করুন নিচ থেকে ওপরের দিকে, ওপরের পাটি করুন ওপর থেকে নিচের দিকে (যে নিয়মে দাঁত ব্রাশ করা হয়)। মাড়িতে ছোট পকেটের মতো যে স্থানে দাঁত থাকে, সেখান থেকে খাবারের কণা বা ময়লা বেরিয়ে যাবে। মাড়িতে পর্যাপ্ত রক্তসঞ্চালন হবে।

কুলকুচার নিয়মকানুন
কুলকুচা করার জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। এটি জীবাণুরোধী দ্রবণ হিসেবে কাজ করবে। এর বিকল্প হিসেবে কাজ করে জীবাণুরোধী মাউথওয়াশ (সমপরিমাণ মাউথওয়াশ ও স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির মিশ্রণ)। অফিসে বারবার পানি গরম করার সুযোগ না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে অফিসেই মাউথওয়াশ রাখতে পারেন। যেকোনো খাবার খাওয়ার পরই ভালোভাবে কুলকুচা করুন।

খাদ্যাভ্যাস ও দাঁত
দাঁতে আঠার মতো আটকে থাকে এমন খাবারের কারণে দাঁতের ক্ষতি হয় সহজে। আধুনিক জীবনের খাদ্যাভ্যাস দাঁতের জন্য অস্বাস্থ্যকর। চকলেট, চুইংগাম, বিস্কিট, ফাস্ট ফুড, মিষ্টি, কোমলপানীয়—যত দূর সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। শিশুদের জন্য উপহার হিসেবে সহজেই এ ধরনের খাবার নেওয়ার প্রচলন রয়েছে। শিশুদের ভালোর জন্যই এসব উপহার না নিয়ে বরং মজার কোনো গল্পের বই, ছবির বই, রং-পেনসিল, গাছের চারা—এ রকম উপহার নেওয়া শুরু করতে পারেন। শক্ত খাবার, আঁশসমৃদ্ধ খাবার (যেমন ফলমূল) প্রভৃতি খাওয়ার অভ্যাস করুন।

শিশুর আরও যত্ন
● শিশুর দাঁত ওঠার পর থেকেই তার দাঁত পরিষ্কার করা একটি নিয়মে দাঁড় করিয়ে ফেলতে হবে। শিশুকে বেশ কয়েক বেলাই খাবার দেওয়া হয়, তবে প্রতিদিন ৩ বার খাবারের পর দাঁত পরিষ্কার করাতে হবে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানি এবং এক চিমটি লবণের মিশ্রণে পরিষ্কার কাপড় বা গজ ভিজিয়ে ঘষে ঘষে শিশুর দাঁত পরিষ্কার করে দিন।
● দুধ খেতে খেতে শিশু যেন ঘুমিয়ে না পড়ে। দুধ খাবার পর মুখ পরিষ্কার করে দিতে হবে।
● দেড়-দুই বছর বয়স হলে শিশুকে দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিতে হবে। খেলনার মতো ব্রাশ দিন ওকে। ভালো মানের জেল টুথপেস্ট দিন, যা মিষ্টি স্বাদের এবং সুগন্ধময়। দাঁত ব্রাশের উত্সাহ পাবে শিশু। এর পাশাপাশি দৈনিক ৩ বার খাবার পর ভালোভাবে কুলকুচার অভ্যাস গড়ে তুলতে ওকে সাহায্য করুন।

দাঁতে কোনো সমস্যা থাক আর না-ই থাক, প্রতি ৬ মাসে একবার দন্তচিকিত্সকের কাছে যান। তিনি যন্ত্রপাতি এবং প্রয়োজনে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে আপনার দাঁত ও দাঁতের ফাঁকের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে দেখবেন। এভাবে বছরে দুবার পরীক্ষার ফলে আপনার দাঁত থাকবে সুরক্ষিত ও মজবুত।

২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ এর দৈনিক প্রথম আলো থেকে সংগ্রহীত।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages